Saturday , 27 April 2024
Breaking News

৪১ মামলার বিচার শেষ হয়নি ১৭ বছর পরও

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, জেএমবির সাংগঠনিক অবস্থা এখন অনেক দুর্বল। বড় ধরনের হামলা করার সামর্থ্য আর তাদের নেই। দেশজুড়ে বোমা হামলা চালানোর ছয় মাসের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে জেএমবির সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক ভেঙে যেতে শুরু করে। গ্রেপ্তার করা হয় জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আবদুর রহমান এবং শীর্ষস্থানীয় নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইসহ তৎকালীন গুরুত্বপূর্ণ সব নেতাকে। ২০১৭ সালে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।

অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিষিদ্ধ এই সংগঠন এখনো বিলুপ্ত হয়নি। জেএমবি থেকে একটা অংশ বেরিয়ে আইএস মতাদর্শীদের সঙ্গে মিলে নতুন জঙ্গি সংগঠন করেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একে নব্য জেএমবি নামে অভিহিত করে। এরা ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযানে নব্য জেএমবির বেশির ভাগ নেতা নিহত বা গ্রেপ্তার হন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, জেএমবি ও নব্য জেএমবি এখন অস্তিত্বসংকটে আছে। নিষিদ্ধ এই সংগঠনে লোকবলের অভাব রয়েছে। সংগঠনের নেতৃত্বও নেই।

পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপির সিটিটিসির হিসাব অনুযায়ী, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশে ১৫৯টি মামলা হয়। মামলাগুলোতে ৭৩৮ জনকে অভিযোগপত্রভুক্ত করা হয়। পুলিশ ও র‍্যাব মোট ৫৬০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ১৩৩ জন। এ পর্যন্ত ১০২টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। রায়ে ১৯৩ জনের সাজা হয়। মামলাগুলোর রায়ে ২৮১ জন খালাস পান।

সর্বশেষ চারটি মামলার রায় হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এতে ১৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পান একজন। আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় পুলিশ এর আগে ১৬টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। বাকি আছে ৪১টি মামলার বিচার। এর মধ্যে ঢাকার আদালতে বিচারাধীন পাঁচটি মামলা।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু গত রোববার প্রথম আলোকে বলেন, বারবার সমন দিয়েও সাক্ষীদের আদালতে সাক্ষ্য দিতে আনা যাচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে এখন বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা হবে।

র‍্যাব বলছে, জেএমবি ছাড়াও অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে তারা অভিযান চালাচ্ছে, নজরদারি করছে। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত র‍্যাব ২ হাজার ৬০০ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন রোববার প্রথম আলোকে বলেন, জেএমবিসহ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া জঙ্গিদের হামলা চালানো বা নাশকতা করার সামর্থ্য নেই। এখন যারাই সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে, র‍্যাব তাদের গ্রেপ্তার করছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial